1. admin@shwapnoprotidin.com : admin : ddn newsbd
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

লালমনিরহাটে ঘোড়া দিয়ে চলছে হাল চাষ

ডিডিএন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১৩৬ সময় দর্শন

আধুনিক যন্ত্রপাতির যুগেও ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করছেন কুড়িগ্রামের বৃদ্ধ কৃষক মমিন মিয়া(৬৫)। কৃষক মমিন মিয়া লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রামের বাসিন্দা।

একটা সময় গ্রামীণ জনপদে সকাল হলে লাঙ্গল জোয়াল আর গরু নিয়ে মাঠে জমিতে যেত রাখালরা। দিনভর হাল চাষ করে বিকেলে বাড়ি ফিরত রাখাল দল। দুপুরের খাবারও মাঠেই সারতেন অনেক রাখাল। গরু মহিষের চাষের এমন দৃশ্য প্রতিদিন দেখা যেত গ্রামীণ জনপদে। যাকে উত্তরে অঞ্চলের গাঁতা চাষ বলত। এখন আধুনিক যুগে এসব বিলুপ্ত হয়েছে। কদরও কমেছে পশুর হাল চাষ ও রাখালদের। গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ প্রচলন প্রায় উঠে গেছে বেশ আগেই। গরু মহিষ দিয়ে হাল চাষ এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। ঠিক এ সময়ে এসে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের ঘটনা নিতান্তই বিরল। আর সেখানে গরু-মহিষের বদলে ঘোড়া দিয়ে অন্যের জমিচাষ করছেন বৃদ্ধ কৃষক মমিন। যা দিয়ে চলছে তার চার সদস্যের পরিবার।

যৌবন কাল থেকে হাল চাষ ও কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন মমিন মিয়া। সেই থেকে হাল চাষ করা ছেড়ে থাকতে পারেননি। প্রযুক্তির এ যুগে এসেও ধরে রেখেছেন আদিম যুগের পশু দিয়ে হাল চাষ। হালের বলদ দুইটি গরু  কিনতে বর্তমান সময়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা প্রয়োজন পড়ে। এত টাকা মূলধন নেই মমিন মিয়ার। তাই যারা ঘোড়া কেনার পরে আর খাওয়াতে পারেন না তাদের কাছ থেকে নামমাত্র দামে ক্রয় করে মোটা তাজা করে হাল চাষের উপযোগী করেন। গরুর চেয়ে ঘোড়ার গতি বেশি। সেদিক থেকে অল্প সময়ে বেশি জমি চাষ করতে পারে মমিন মিয়ার ঘোড়ার হাল। বর্তমানে তার বাড়িতে ৪টি ঘোড়া রয়েছে। পালাক্রমে বিশ্রাম দিয়ে হাল চাষে নিয়ে যান তার ঘোড়াকে।

বৃদ্ধ মমিন মিয়া বলেন, আমার নিজের কোন জমি নেই। মানুষের জমিতে হাল চাষ করি। বিঘা প্রতি ৫০০ টাকা পাই। প্রতি দিন গড়ে ২/৩ বিঘা জমিতে হাল চাষ করে যা আয় হয় তা ঘোড়ার খাবার কিনে বাকিটা দিয়ে চলে আমার ৪ সদস্যের সংসার। আমি গরীব মানুষ। যুবক বয়স থেকে এ কাজ করে সংসার চালাই। আগে গরুর হাল ছিল। এখন গরুর দাম বেশি তাই ঘোড়া কিনেছি। গরুর চেয়ে ঘোড়ার গতি বেশি। তাই জমিও বেশি চাষ করা যায় ঘোড়ার হালে। তাই দীর্ঘ প্রায় ৭/৮ বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। বাউরা এলাকার কৃষক আজিজুল বলেন, খোলা মাঠ থাকলে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করা সম্ভব। কিন্তু ফসলের মধ্যে অল্প জমি চাষের জন্য ট্রাক্টর নেয়া সম্ভব হয় না এবং অল্প জমি চাষের জন্য ট্রাক্টরও আসে না। তাই আমার মত খন্ড জমির মালিকদের ভরসা মমিনের ঘোড়ার হাল। ট্রাক্টরের চেয়ে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে নিলে মইও দেয়া যায়। এতে জমিও সমান হয়। বিভিন্ন কারনে মমিন মিয়ার ঘোড়ার হালের কদর বেশি এ এলাকায়।

বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মামুন হোসন সরকার বলেন, মমিনের ঘোড়ার হালের এলাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে। তার বাড়িতে চার টি ঘোড়া রয়েছে।

পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হারুন মিয়া বলেন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির যুগে প্রায় কৃষকরাই এখন উন্নত মানের যন্ত্র দিয়ে জমি চাষ করেন। এখন গরু-মহিষের হাল চাষ চোখে পড়ে না। সেখানে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করাটা অনেকটাই বিরল। মমিন মিয়া জীবিকার প্রয়োজনে অন্যের জমিতে ঘোড়া দিয়ে চাষ বা মই দিচ্ছেন। তবে আমরা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সবসময় আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে চাষাবাদের জন্য পরামর্শ দেই।

বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২5© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host